languageIcon
search
search
দিন ও রাতের বিভিন্ন দুআ দিন ও রাতের বিভিন্ন দুআ ( এর সংখ্যা 4 অধ্যায় )

1 বার

brightness_1

اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

ঘুমের সময় আয়াতুল কুরসী পাঠ করা সুন্নাত। তাতে সকাল পর্যন্ত শয়তান থেকে সুরক্ষার অঙ্গীকার রয়েছে।

দলীল: যাকাত চোরের সঙ্গে আবু হুরাইরা রা. এর প্রসিদ্ধ ঘটনা। হাদীসে এসেছে আবু হুরাইরা রা. বলেন, ‘তখন নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার গত রাতের বন্দীর কী অবস্থা’? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তার ধারণা সে আমাকে এমন কিছু বাক্য শিখিয়ে দিবে, যার দ্বারা নাকি আল্লাহ আমার উপকার করবেন। তখন আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বললেন, ‘সেগুলো কী’? আমি বললাম, সে আমাকে বলেছে, যখন বিছানায় ঘুমাতে যাবে, তখন আয়াতুল কুরসী পাঠ করবে। সে আমাকে আরও বলেছে, এটা পড়লে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন নিরাপত্তা-প্রহরী নির্ধারণ করা হবে। সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছেও আসতে পারবে না। আর নেক আমলের ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কিরাম ছিলেন সবার আগে। তাই আবু হুরাইরা তাকে ছেড়ে দিলেন। তখন নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘সে তোমাকে একটা সত্য কথা বলেছে। অথচ সে চরম মিথ্যুক। জানো আবু হুরাইরা গত তিন রাত ধরে কার সঙ্গে তোমার দেখা-সাক্ষাৎ ও কথা হচ্ছে? তিনি বললেন, না। নবীজী বললেন, সে হচ্ছে শয়তান’। (বুখারী ২৩১১ মুআল্লাক; নাসাঈর সুনানে কুবরা ১০৭৯৫) 

.......

1 বার

brightness_1

দলীল আবু মাসঊদ আনসারী রা. এর হাদীস। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রাতের বেলা সূরা বাক্বারার শেষের এই দুই আয়াত তেলাওয়াত করবে, তার জন্য এদু’টি যথেষ্ট হবে’। (বুখারী ৪০০৮, মুসলিম ৮০৭)। মূলত সূরার বাক্বারার শেষের আয়াত দু’টি ঘুমের সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো দুআ নয়; বরং রাতের বেলার স্বাভাবিক দুআ। সুতরাং রাতে কেউ পড়তে গেলে যদি ঘুমের সময় স্মরণ আসে, তখনই পড়ে নিবে। 

‘তার জন্য এদু’টি যথেষ্ট হবে’- নবীজীর এই বাণীর মর্মার্থ কী এ ব্যাপারে উলামায়ে কিরামের বিভিন্ন বক্তব্য রয়েছে: 

কারও মতে, তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য যথেষ্ট হবে। কারও মতে, শয়তান থেকে রক্ষা করবে। 

আবার কারও মতে, সব-ধরনের মুসিবত থেকে রক্ষা করবে। ইমাম নববী র. বলেছেন, সব ধরনের সম্ভাবনাই রয়েছে।  দেখুন: শরহুন নববী লিমুসলিম- হাদীস নং ৮০৮, সূরা ফাতিহা ও বাক্বারার শেষ আয়াতগুলোর ফজীলত অধ্যায়)

 

.......

3 বার

brightness_1

এর দলীল হচ্ছে:

আয়েশা রা. এর হাদীস। ‘নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন প্রত্যেক রাতে বিছানায় ঘুমাতে যেতেন, তখন দুই হাত একত্র করে তাতে ফুঁক দিতেন। এরপর তাতে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পড়তেন। অতঃপর দুই হাত সাধ্যমতো গোটা শরীরে বুলিয়ে দিতেন। মাথা, মুখমণ্ডল ও শরীরের সামনের ভাগ থেকে শুরু করতেন। তিন বার করতেন। (বুখারী ৫০১৭)

পেছনের হাদীসটি দ্বারা বোঝা গেলো: নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতি রাতে এই সুন্নাতটির ওপর আমল করতেন। কারণ হাদীসে আয়েশা রা. স্পষ্টভাবে বলেছেন, ‘প্রত্যেক রাতে’। এটার পদ্ধতি হচ্ছে: দুই হাত একত্র করে সূরা ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস পড়ে তাতে ফুঁক দিবে। এরপর মাথা ও মুখমণ্ডল থেকে শুরু করে সাধ্যমতো গোটা শরীরে হাত মুছে নিবে। এভাবে তিনবার করবে।

.......

1 বার

brightness_1

اللَّهُمَّ رَبَّ السَّمَاوَاتِ وَرَبَّ الأَرْضِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَيْءٍ، فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى، وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَيْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ، اللَّهُمَّ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَيْءٌ ، وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَيْءٌ، وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَيْءٌ، اقْضِعَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ

‘আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতি ওয়া  রাব্বাল আরদ, ওয়া রাব্বাল আরশিল আজীম। রব্বানা ওয়া রব্বা কুল্লি শাইয়িন, ফালিকাল হাব্বি ওয়ান-নাওয়া, ওয়া মুনযিলাত তাওরাতি ওয়াল ইনজীলি ওয়াল ফুরক্বান। আঊযুবিকা মিন শাররি কুল্লি শাইয়িন আনতা আখিজুম বিনাসিয়াতিহী, আল্লাহুম্মা আনতাল আউয়াল; ফালাইসা ক্ববলাকা শাইউন। ওয়া আনতাল আখির; ফালাইসা বা’দাকা শাইউন। ওয়া আনতায যাহির; ফালাইসা ফাওক্বকা শাইউন, ওয়া আনতাল বাতিন; ফালাইসা দুনাকা শাইউন। ইকজি আন্নাদ-দাইনা ওয়া আগনিনা মিনাল ফাক্বরি’। (মুসলিম ২৭১৩)

.......

100 বার

brightness_1

سبحان الله (33)، الحمد لله (33)، الله أكبر (34) م

সুতরাং সুন্নাত হচ্ছে ঘুমের সময় ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া। এটার বিশাল  ফজীলত রয়েছে। এটা শরীরে আগামী দিনের শক্তি সরবরাহ করে।

দলীল আলী রা. এর হাদীস। ‘যাতা ঘুরাতে ঘুরাতে এক পর্যায়ে ফাতেমা রা. এর হাত যখম হয়ে যায়। ঠিক সেই সময় নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)  এর কাছে কিছু যুদ্ধবন্দী আসে। তখন  তিনি নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর  কাছে (ভৃত্যের জন্য) ছুটে যান। কিন্তু নবীজীকে না পেয়ে আয়েশা রা.  কে বিষয়টি জানিয়ে চলে আসেন।  নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে এলে আয়েশা রা. তাঁকে বিষয়টি জানান। আলী রা. বলেন, রাতের বেলা আমরা তখন শুয়ে পড়েছিলাম। এমন সময় নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বাড়িতে এলেন। আমরা উঠতে গেলে তিনি বললেন, ‘বসো বসো!’ এরপর তিনি আমাদের দু’জনের মাঝে বসলেন। আমার বুকের ওপর তাঁর পায়ের শীতলতা অনুভব করছিলাম। তিনি বললেন,  ‘আমি কি তোমাদেরকে তোমাদের কাঙ্ক্ষিত বস্তুর চেয়ে উত্তম কিছু দিবো না? যখন তোমরা বিছানায় যাবে, তখন ৩৪ বার আল্লাহু আকবার বলবে, ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ বলবে। আর ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ বলবে। এটা ভৃত্যের চেয়ে তোমাদের জন্য উত্তম’। (বুখারী: ৩৭০৫, মুসলিম: ২৭২৭)

অপর একটি বর্ণনায় এসেছে: আলী রা. বলেন, ‘নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মুখ থেকে শোনার পর এই আমলটি কখনও আমি ছাড়িনি। তাকে জিজ্ঞাসা করো, ‘সিফফীনের রাতেও না? তিনি বললেন, ‘নাহ’ সিফফীনের রাতেও না’। (বুখারী ৫৩৬২, মুসলিম ২৭২৭)

 

.......

1 বার

brightness_1

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْلَمْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ. لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ

‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আসলামতু ওয়াজহী ইলাইক, ওয়া ফাওয়াজতু আমরী ইলাইক, ওয়া আলজা’তু যাহরী ইলাইক, রাগবাতান ওয়া রাহবাতান ইলাইক। লা মালজাআ ওয়া লা মানজা মিনকা ইল্লা ইলাইক। আমানতু বি কিতাবিকা আল্লাযী আনযালতা, ওয়া বি নাবিইয়্যিকা আল্লাযী আরসালতা’। (বুখারী ২৪৭, মুসলিম ২৭১০)... হাদীসের শেষ অংশে রয়েছে ‘নবীজী সা. বলেন, ‘ঘুমের আগে   এটাই যেন হয়  তোমার শেষ কথা।  এরপর যদি এই রাতে তুমি মারা যাও, তবে তুমি ফিতরাতের ওপর ( নিস্পাপ অবস্থায়) মারা যাবে’। মুসলিমের রেওয়ায়েতে এসেছে, ‘আর যদি রাত শেষ হয়ে দিন আসে, তবে সেটা তোমার জন্য উত্তম দিন’।

উক্ত হাদীসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাতের কথা বলা হয়েছে। সেটা হচ্ছে, ঘুমের আগে এই দুআই যেন হয় একজন মুমিনের শেষ কথা। আর এটার জন্য মহা পুরস্কার ঘোষিত হয়েছে। সুতরাং যদি সেই রাতেই কেউ মারা যায়, তবে সে ফিতরাত তথা মিল্লাতে ইবরাহীমের সত্য দীনের ওপর মৃত্যুবরণ করলো। আর যদি বেঁচে থাকে, তবে সে রিযিক, আমল ইত্যাদির বরকতের ওপর দিন শুরু করলো। এটা ব্যাপক অর্থবোধক একটি বাক্য; পূর্বোক্ত সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

.......

1 বার

brightness_1

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মহা ফজীলতপূর্ণ দুআর কথা বলা জরুরি মনে হচ্ছে। দুআটি আল্লাহ তাআলা দয়া করে নিজ বান্দাদের দান করেছেন। সহীহ বুখারীতে সাহাবী শাদ্দাদ বিন আওস রা. এর বর্ণনায় এসেছে, নবী কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: ‘সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো: আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বী লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাকতানী ওয়া আনা আবদুকা। ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ও’দিকা মাসতাতা’তু; আঊযু বিকা মিন শারি মা সানা’তু, আবূউ লাকা বি-নি’মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবূউ লাকা বি-যানবী; ফাগফিরলী ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা’। এরপর তিনি (নবীজী) বললেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি বিশ্বাস সহকারে এই দুআ দিনের বেলা পড়ে সেই দিন সন্ধ্যার আগে মৃত্যুবরণ করে তবে সে জান্নাতী হবে। আবার যদি কোনো ব্যক্তি বিশ্বাস সহকারে রাতে এটা পড়ে এবং ভোর হওয়ার আগে মৃত্যু বরণ করে, তবে সেও জান্নাতী হবে’। (বুখারী ৬৩০৬)

.......