জামাতের ইমাম কিংবা একাকী নামাজ আদায়কারীর জন্য ‘সুতরা’ ব্যবহার করা সুন্নাত। আর মুক্তাদীর জন্য ইমামের সুতরা-ই যথেষ্ট।
দলীল হচ্ছে আবু সাঈদ খুদরী রা. এর ‘মারফূ’ হাদীস। হাদীসের অংশবিশেষ হচ্ছে: ‘তোমাদের কেউ যখন নামাজ পড়ে তখন যেন মানুষের থেকে আড়াল গ্রহণ করে...’ (বুখারী ৫০৯, মুসলিম ৫০৫)। নামাজে ‘সুতরা’ গ্রহণ সুন্নাত হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য হাদীস রয়েছে। নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বস্তু সুতরা হিসেবে ব্যবহার করেছেন। উদাহরণত খাট, দেয়াল, খেজুরের কাণ্ড, কাঠের টুকরা, বল্লম, বর্শা, এমনকি সওয়ারী ইত্যাদি।
লোকালয় কিংবা মরুভূমিতে, ঘরে কিংবা সফরে সকল অবস্থাতেই ‘সুতরা’ ব্যবহার করা উচিত। সামনে দিয়ে কারও যাওয়ার আশংকা থাকুক বা না থাকুক। কেননা হাদীসে এ ব্যাপারে কোনো পার্থক্যের কথা আসেনি। তাছাড়া নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে ও সফরে সবসময় সুতরা ব্যবহার করতেন। আবু জুহাইফা রা. এর হাদীসে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। (বুখারী ৫০১, মুসলিম ৫০৩)
সুতরা কাছাকাছি রাখা সুন্নাত।
সুতরা এতটা কাছাকাছি রাখা সুন্নাত যে, সিজদার জায়গা আর সুতরার মাঝে যেন বেশির চেয়ে বেশি একটা ছাগল অতিক্রম করার জায়গা থাকে।
দলীল হচ্ছে সাহল বিন সা’দ সায়েদী র. এর হাদীস। তিনি বলেন, ‘নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নামাজের জায়গা আর দেয়ালের মাঝে একটি বকরী অতিক্রম করার মতো জায়গা থাকতো’। (বুখারী ৪৯৬, মুসলিম ৫০৮)। এখানে নামাজের জায়গা বলতে উদ্দেশ্য হলো সিজদার জায়গা। অপরদিকে মুসনাদে আহমদ ও সুনানে আবু দাঊদ এ এসেছে যে, নবীজী ও সুতরার মাঝে তিন হাত জায়গা থাকতো (আহমদ ৬২৩১, আবু দাঊদ ২০২৪, আলবানী এটাকে সহীহ বলেছেন, (সহীহ আবু দাঊদ ৬/২৬৩) বুখারীতে এটার দিকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় (৫০৬)। এই হিসাব মূলত পায়ের ও সুতরার মাঝের জায়গা।
দলীল: আবু সাঈদ রা. এর হাদীস। তিনি বলেন, রাসূলে আকরাম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের যখন কেউ সামনে সুতরা রেখে নামাজ পড়ে, এরপর কোনো লোক তার সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে যায়, তখন সে যেন তার গলায় ধাক্কা দেয়। তারপরেও যদি লোকটি ক্ষান্ত না হয়, তবে যেন তার সঙ্গে মারামারি শুরু করে দেয়। কেননা সে হচ্ছে শয়তান’। (মুসলিম ৫০৫)
আর যদি সামনে দিয়ে মহিলা, কালো কুকুর বা গাধা ইত্যাদি অতিক্রম করতে যায়, তবে বিশুদ্ধ মত অনুযায়ী তাদের প্রতিহত করা ওয়াজিব। কেননা আবু যর রা. এর হাদীস অনুযায়ী এগুলো নামাজের সামনে দিয়ে অতিক্রম করলে নামাজ ভেঙে যায়। (মুসলিম ৫১০)। তবে মহিলা ছাড়া অন্য কিছু অতিক্রম করলে নামাজ ভাঙে না। ইবনে উসামীন র. এর বক্তব্যও এটা।
প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক করা সুন্নাত।
যেসকল স্থানে মিসওয়াকের ব্যাপারে অত্যধিক গুরুত্বের কথা এসেছে, এটা হলো তার তৃতীয় স্থান।
দলীল:
আবু হুরাইরা রা. এর হাদীস। নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যদি আমি আমার উম্মতের (কিংবা বলেছেন) মানুষের ওপর কষ্টের আশংকা না করতাম, তবে প্রত্যেক নামাজের সময় তাদের মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম’। (বুখারী ৮৮৭)