সূর্য উপরে উঠে গেলে ‘জুহা’র সময় জুহার নামাজ পড়া সুন্নাত।
দলীল:
ক. আবু হুরাইরা রা. এর হাদীস। তিনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি অসীয়ত করেছেন। ১. প্রত্যেক মাসে তিনটি রোজা রাখা। ২. জুহার দুই রাকাআত নামাজ আদায় করা। ৩. ঘুমের আগে বিতরের নামাজ আদায় করা’। আবু দারদা রা. কেও নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই নামাজের অসীয়ত করেছেন। (মুসলিম ৭২২) আবু যর রা. কে এ ব্যাপারে অসীয়ত করেছেন (নাসাঈর সুনানে কুবরা ২৭১২)। আলবানী এটাকে সহীহ বলেছেন ( দেখুন: সহীহাহ ২১৬৬)।
খ. আবু যর রা এর হাদীস। তিনি বলেন, নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের প্রত্যেক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপর সদকা রয়েছে। সুবহানাল্লাহ সদকা। আলহামদুলিল্লাহ সদকা। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ সদকা। আল্লাহু আকবার সদকা। সৎ কাজের আদেশ সদকা। অসৎ কাজের নিষেধ সদকা। দুই রাকাআত জুহার নামাজ এসব কিছুর জন্য যথেষ্ট’।(মুসলিম ৭২০)
সহীহ মুসলিমে আয়েশা রা. এর হাদীসে এসেছে, প্রত্যেক মানুষের শরীরে ৩৬০ টি জোড়া রয়েছে। যে ব্যক্তি এই সংখ্যার সদকা আদায় করলো, সে জাহান্নাম থেকে নিজেকে দূরে রাখলো।
সময়:
সূর্য এক বর্শা পরিমাণ উঁচু হওয়ার পর থেকেই জুহার সময় শুরু হয়। অন্য কথায়, নিষিদ্ধ সময়ের পর থেকে।
আর শেষ হয় সূর্য ঢলে পড়ার সামান্য সময় আগে। অন্য কথায়, জোহরের ওয়াক্ত আসার প্রায় ১০ মিনিট আগ পর্যন্ত।
দলীল আমর বিন আবাসাতা রা. এর হাদীস: ‘ফজরের নামাজ আদায় করবে। এরপর সূর্য উঁচুতে ওঠার পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এরপর নামাজ পড়বে। কেননা এই নামাজে ফিরিশতারা উপস্থিত হয়ে থাকেন। এরপর যখন সূর্য বর্শার সমপরিমাণ হবে (তথা যখন মধ্যগগনে থাকবে) তখন নামাজ পড়বে না। কারণ তখন জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয়’..। (মুসলিম ৮৩২)
জুহার নামাজের সর্বোত্তম সময় হলো:
শেষ ওয়াক্ত। যখন সূর্য উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
দলীল: যায়দ বিন আরকাম রা. এর হাদীস। নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আওয়াবীনের (তথা জুহার) নামাজ হচ্ছে যখন সূর্যের তাপে উটের বাচ্চা ছুটতে থাকে (তথা সূর্যের তাপ প্রকট হয়)। (মুসলিম ৭৪৮)
জুহার নামাজের রাকাআত সংখ্যা
জুহার নামাজ সর্বনিম্ন দুই রাকাআত। দলীল বুখারী ও মুসলিমে আবু হুরাইরা রা. এর হাদীস- ‘আমার প্রিয় বন্ধু (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে তিনটি অসীয়ত করেছেন.... একটি হচ্ছে জুহার দুই রাকাআত নামাজ’। (বুখারী ১৯৮১, মুসলিম ৭২১)
সর্বনিম্ন রাকাআতের ব্যাপারে মতৈক্য থাকলেও সর্বোচ্চ কত রাকাআত পড়া যাবে এটা নিয়ে উলামায়ে কিরামের মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন আট রাকাআত। কিন্তু বিশুদ্ধ মত হচ্ছে, বেশির কোনো সীমারেখা নেই। সুতরাং যত রাকাআত ইচ্ছা পড়তে পারবে। দলীল আয়েশা রা. এর হাদীস। তিনি বলেন, ‘রাসূলে কারীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুহার নামাজ চার রাকাআত পড়তেন। ইচ্ছা হলে যত খুশি বেশি পড়তেন’। (মুসলিম ৭১৯)